কুমিল্লায় পাঁচ তলা বাড়ির মালিক শামসুল হক। সাত শতক জমির ওপর নির্মিত ‘হক মঞ্জিল’ নামের ওই ভবনের তিন তলায় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকেন তিনি। সেই ভবনের ছাদের ওপর এক টিনের ঝুপড়ি ঘরে ঠাঁই হয়েছে তার বৃদ্ধ বাবা ইয়াকুব আলীর। ঘরের এক পাশে মুরগি খামার, অন্যপাশে বস্ত্রহীন অবস্থায় পড়ে আছেন অসুস্থ ইয়াকুব। চটের বিছানার আশেপাশে দুর্গন্ধ ও ব্রয়লার মুরগির ময়লা।
ভুক্তভোগী ইয়াকুব আলী (৮০) কুমিল্লা লাকসাম পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে কলেজে রোড ও পশ্চিমগাঁও পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা। অভিযুক্ত শামসুল হক ইয়াকুব আলীর বড় ছেলে। তিনি ছাড়াও ইয়াকুব আলীর আরও এক ছেলে এবং পাঁচ মেয়ে রয়েছেন। তবে অসহায় বাবার খবর রাখেন না কেউ। ছোট ছেলে প্রবাসে তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন। মেয়েদের সবার বিয়ে হয়ে গেছে, বাবার সম্পত্তির ভাগ বুঝে নিয়ে যে যার মতো স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করছেন। তারাও খোঁজ রাখেন না বৃদ্ধ বাবার। তাই বাধ্য হয়েই বড় ছেলের বাড়ির ছাদে চরম অবহেলায় দিন কাটাচ্ছেন ইয়াকুব আলী।
ঘটনাটি কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার পশ্চিমগাঁও পুরান বাজার এলাকার। বৃদ্ধকে অবহেলার খবর পেয়ে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা খাতুন ঘটনাস্থলে যান। তিনি শামসুল হককে এক দিনের মধ্যে তার বাবাকে বাড়িতে নিয়ে যত্নে রাখার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ৫ তলা বাড়ির ছাদে মুরগীর খোয়াড়ের পাশে একটি ঘরে শুয়ে আছেন বৃদ্ধ ইয়াকুব আলী। লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা খাতুন বৃদ্ধ ইয়াকুব আলীর ছেলে শামসুল হককে শাসাচ্ছেন। এ সময় উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখা যায় শামসুল হককে। তিনি বলেন, আমার দাঁতের যত্ন আমি কীভাবে নেব এটা আমার ব্যাপার, আপনাদের কী? এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিতার-মাতার হক আইন ২০১৩ অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থার কথা বললে শান্ত হন শামসুল হক। ইউএনও ইয়াকুব আলীর দেখভাল ও থাকার সুব্যবস্থার জন্য তাকে এক দিন সময় দেন।
DHAKA POST
Discussion about this post