আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ৬০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া এই বন্যায় হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস এবং বাস্ত্যুচুত হয়েছেন ১৩ লাখের বেশি মানুষ।
রোববার নাইজেরিয়ার সরকারি এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিনের ভয়াবহ বন্যায় ছয় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। টুইটারে দেশটির মানবিক কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ১৩ লাখের বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
নাইজেরিয়ার মানবিক কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী সাদিয়া উমর ফারুক বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ পর্যন্ত (১৬ অক্টোবর) বন্যায় ৬০৩ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তিনি বলেছেন, গত সপ্তাহে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০০ জনে পৌঁছেছিল। কিন্তু কিছু রাজ্যের সরকার বন্যা মোকাবিলায় যথাযথ প্রস্তুতি নিতে না পারায় মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে।
উমর ফারুক বলেছেন, ভয়াবহ এই বন্যায় ৮২ হাজারের বেশি বাড়িঘর পুরোপুরি ধ্বংস এবং প্রায় এক লাখ ১০ হেক্টর আবাদি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
নাইজেরিয়ায় সাধারণত বর্ষা মৌসুম জুন মাসে শুরু হলেও গত আগস্ট থেকে কিছু কিছু অঞ্চলে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে বলে দেশটির জাতীয় জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এনইএমএ) জানিয়েছে।
এর আগে, ২০১২ সালে এক বন্যায় আফ্রিকার এই দেশটিতে অন্তত ৩৬৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। সেই সময় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ২১ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন।
গত কয়েক বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবের মুখোমুখি হয়েছে সাব-সাহারা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে ইতোমধ্যে এই অঞ্চলের অনেক দেশের অর্থনীতি ব্যাপক চড়াই-উৎড়াইয়ের সম্মুখীন হয়েছে। তার মাঝে এই বন্যা নাইজেরিয়ার অর্থনীতিকে বড় ধরনের সংকটের মুখে ফেলেছে।
স্থানীয়ভাবে চালের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দেশটির সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু আকস্মিক বন্যার কারণে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ২০ কোটি মানুষের এই দেশটিতে চালের দাম আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন নাইজেরিয়ার উৎপাদনকারীরা।
গত মাসে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলেছে, বিপর্যয়কর ক্ষুধার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা বিশ্বের ছয়টি দেশের একটি নাইজেরিয়া।
সূত্র: এএফপি।
Dhaka Post
Discussion about this post