লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে বিমানের ফ্লাইট সিডিউল। গত দুই দিন ধরে বেশিরভাগ ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের ৪/৫ ঘন্টা, কোনটি আরো বেশি বিলম্বে ছেড়েছে। বাতিল করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট। এই অবস্থায় কুয়েত, কাতার, দুবাই, ওমান ও সৌদি আরবগামী যাত্রীদেরকে বিমানবন্দরে চরম ভোগাান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
খবর পেয়ে শনিবার সন্থ্যায় বিমানবন্দরে ছুটে যান বিমান প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি দ্রুত এই সংকট নিরসনের জন্য বিমান ম্যানেজমেন্টকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে তিনি পাইলটদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট এসোসিয়েশন (বাপা) অফিসে যান। তিনি সেখানে একান্তে পাইলটদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দাবি দাওয়া গুলো শুনেন এবং ন্যায্য দাবিগুলো দ্রুত নিরসনের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রীকে পেয়ে বাপা নেতারা বলেছেন, বিমান প্রশাসন পাইলটদের ‘মিথ্যা আশ্বাস’ দিয়েছিল। তারা বলেছিল, আগস্ট মাসে পাইলটদের বেতন সমন্বয় করা হবে। সেটি না করায় পাইলটেরা দুই মাস অপেক্ষা করেছেন। পাইলটরা এখন চাকরির চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৭৫ ঘণ্টা আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করবেন। এর বাইরে আর কাজ করবেন না।
বিমানবন্দরের কোথাও ঠায় নেই বিদেশগামীদের জন্য। বিশেষ করে নারী ও শিশু যাত্রীদের মানবেতর জীবন কাটাতে দেখা গেছে। ঘন্টার পর ঘন্টা ফ্লাইট বিলম্ব হলেও বিমানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই এই সংকট নিরসনে।
পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট এসোসিয়েশন বাপা সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বলেন, তারা তাদের অভিযোগটি শনিবার বিমান প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে জানিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, পাইলটদের দাবি একটি, তারা ২০১৯ সালের আগে যে বেতন পেতেন সেই বেতনভাতা তাদের ফিরিয়ে দেয়া হোক। অণ্যথা তারা তাদের নির্ধারিত ৭৫ ঘন্টার বেশি ফ্লাই করবেন না। তিনি বলেন, আমরা কোন আন্দোলন করছি না। তবে তিনি পাইলটদের এই সিদ্দান্তের কারণে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বসে গেছে বলে স্বীকার করেন।
জানাগেছে পাইলটদের বেতন সমন্বয় না করায় অধিকাংশ পাইলট মাসে ৭৫ ঘন্টার বেশি ফ্লাইট না করায় এই সংকট তৈরী হয়েছে। পাইলটরা বলেছেন, বার বার আন্দোলন করার পরও বিমান ম্যানেজমেন্ট পাইলটদের দাবি পুরণ করছেন না। একারণে তারা মাসে ৭৫ ঘন্টার বেশি ফ্লাইট এবং ৮ দিনের কম ডে-অফ নিচ্ছেন না।
তাদের অভিযোগ করোনা ভাইরাসের কারণে অর্থ স্বাশ্রয় করতে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ হারে পাইলটদের বেতন কর্তনের যে সিদ্ধান্ত ছিল কতৃপক্ষ সেটি সমন্বয় করেছে। কিন্তু ওভারসিস এলাউন্স উড্ডয়ন ঘন্টার অনুপাতিক হারে প্রদানের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেটি এখনো বাতিল করেনি। পাইলটদের অভিযোগ ওভারসিস এলাউন্স তাদের মুল বেতনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি উড্ডয়ন ঘন্টার আনুপাতিক হারে বন্টন সম্পুর্ণ অবৈধ। এটা করতে গিয়ে জুনিয়ন পাইলটদের ৪৮ শতাংশ এবং সিনিয়র পাইলটদের মুল বেতনের ২২ শতাংশ কমে গেছে।
Discussion about this post