করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় এক- তৃতীয়াংশ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বাকি রোগীদেরও ৯৭ শতাংশের সংক্রমণই ভয়াবহ নয়। মাত্র তিন ভাগ রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সার্বক্ষণিক হিসাব রাখা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যে এমন আশাব্যঞ্জক চিত্র পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টা পর্যন্ত বিশ্বে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ লাখ ৬২ হাজারের বেশি মানুষ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৩০ হাজার রোগী। ফলে বর্তমানে বিশ্বে করোনা রোগী আছেন ২০ লাখের বেশি। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ৫৫ হাজারের মতো। কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত বাকি প্রায় ১৯ লাখ ৪৭ হাজার রোগীর সংক্রমণ মৃদু। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে দুই লাখ ৩০ হাজার ৩৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৩৯ এবং মৃত্যু হয়েছে ৯৬৭৭ জনের।
করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার চার মাস পর বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এতে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যু ও গুরুতর অসুস্থতা কমেছে। তবে বিভিন্ন দেশ লকডাউন শিথিল করায় সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কভিড-১৯ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬২ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, অর্থনীতিকে ফেলে দিয়েছে ভয়াবহ মন্দায়। এসবই ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাকে ধীরে ধীরে ফিকে করে দিচ্ছে বলে মত অনেকের। যুক্তরাষ্ট্রে গত সপ্তাহে আরও ৩৮ লাখ মানুষ বেকার সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন। এতে মধ্য মার্চ থেকে দেশটিতে বেকার সুবিধার জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা তিন কোটি ছাড়িয়ে গেল।
করোনা মহামারিতে মৃত্যুর দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালির পরই উঠে এলো যুক্তরাজ্য। দেশটিতে এ ভাইরাসে মারা গেছেন ২৭ হাজার ৭১১ জন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তার দেশ করোনার চূড়া অতিক্রম করেছে। ইউরোপের আরেক দেশ জার্মানিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় যুক্তরাজ্যের সমান। তবে জার্মানিতে মারা গেছেন যুক্তরাজ্যের এক-চতুর্থাংশেরও কম মানুষ।
আক্রান্তের দিক থেকে শীর্ষ আটে থাকা রাশিয়া ও তুরস্কেও মৃত্যু অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। রাশিয়ায় গতকাল আক্রান্ত হয়েছেন ৭০৯৯ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৬ হাজার ৪৯৮ এবং মৃত্যু হয়েছে ১০৭৩ জনের। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১০১ জন।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এই প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। এ মহামারির শিকার হওয়ার পরও হাতেগোনা যে কয়েকটি দেশ এ ভাইরাসের কবল থেকে মুক্ত হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া তার অন্যতম। এ দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজারের বেশি লোক আর মৃত্যু হয়েছে ২৪৭ জনের।
আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থা বলেছে, বিশ্বে নজিরবিহীন লকডাউনের ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের হার এবার ৮ শতাংশ কমে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফিজার বলেছে, জার্মানির বায়োএনটেকের সহায়তায় চলতি বছরের মধ্যেই এক থেকে দুই কোটি টিকা তৈরির টার্গেট তাদের। এখন তারা ওই টিকা পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষায় আছেন।
Discussion about this post