ব্যয় কমাতে এবার চুক্তিভিত্তিক দেশি-বিদেশি ১৭ পাইলটকে ছুটিতে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ বিমান। এতে মাসে কমপক্ষে দেড় কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বিমানের অপারেশন বন্ধ। এ কারণে চুক্তিভিত্তিক পাইলটদের বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ফ্লাইট অপারেশন শুরু হলে তারা আবার যোগ দেবেন। বিমান এমডি বলেছেন, চুক্তিভিত্তিক পাইলটদের বিনা বেতনে ছুিটতে পাঠানো হলেও অন্যান্য শাখার চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে না।
জানা গেছে, ১৭ পাইলটের মধ্যে ছোট উড়োজাহাজ ড্যাস-৮ কিউ৪০০’র ৩ জন, বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজের ৬ জন, বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর এর ৮ জন আছেন। নতুন উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের বিদেশি পাইলটদের আগেই বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে নিজ দেশে চলে গেছেন। একজন পাইলট দেশে নিজ খরচে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। বিমানের প্রশাসন শাখা সূত্রে জানা গেছে চুক্তিভিত্তিক সব পাইলট এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়বেন। রোববার তাদের সবাইকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে বিমানের সার্বিক খরচ মেটাতে সংস্থার নির্বাহী পরিচালকমণ্ডলীর চলতি বছরের সপ্তম ও অষ্টম সভায় বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকৌশল খাতের ব্যয় সংকোচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিমানের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে ৬২৮ কোটি টাকা চেয়ে সম্প্রতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোকাব্বির হোসেন। চিঠিতে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বিমানের ক্ষতির কারণগুলো তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, গত দুই মাসে ফ্লাইট বাতিলের পাশাপাশি যাত্রী না থাকায় সব ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিক্রীত টিকিটের কোনো ধরনের চার্জ না কেটেই টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে নগদ অর্থ না থাকায় এপ্রিল মাসে কর্মীদের বেতনসহ নানা স্থায়ী খরচ চালাতে ৬২৮ কোটি টাকা প্রয়োজন।
করোনার প্রভাবে মার্চ থেকে একে একে বন্ধ হয়ে গেছে বাংলাদেশ বিমানের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব রুট। বন্ধ হয়ে গেছে টিকিট বিক্রি, কার্গো পরিবহন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং থেকে আসা রাজস্ব আয়। গত ৩ মাসে বিমান অন্তত ৪০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারিয়েছে। কিন্তু সংস্থাটির নিয়মিত ব্যয় চলছেই। এ পরিস্থিতিতে ব্যয় সংকোচনে লিজে আনা ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশগুলোও ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে বিমানের পাইলট কেবিন ক্রুসহ ষষ্ঠ থেকে ওপরের গ্রেডের কর্মকর্তাদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ কর্তন শুরু হয়ে গেছে। বাতিল করা হয়েছে সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওভারটাইম ভাতা। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গাড়ির জ্বালানি খরচসহ ১০টি খাতের আনুষঙ্গিক খরচ।
Discussion about this post