৮ মার্চ দেশে নভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্তের খবর প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফেস মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম বেড়ে যায় হু হু করে। পাশাপাশি দোকান থেকে এসব পণ্য উধাও। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাবানের চেয়ে করোনার জীবাণু ধ্বংসে কার্যকরী আর কিছু নেই। এই জীবাণুনাশের জন্য কোনও বিশেষায়িত সাবানের দরকার নেই। বরং সাধারণ সাবান কোভিড-১৯ এর জীবাণু ধ্বংসে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। এমনকি জীবাণু ধ্বংসে এটা স্যানিটাইজারের চেয়েও বেশি কার্যকর বলে ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কোভিড-১৯-এর এই অন্ধকার দিনে স্বাস্থ্যকর থাকার সেরা উপায় হিসাবে আমরা সকলেই হাত ধোয়ার কথা শুনছি। এটাই করোনামুক্তির সেরা উপায়। প্রত্যেক পিতামাতারা তাদের সন্তানকে এমনকি শিশু ও কিশোরদের জিজ্ঞাসা করেছেন, তুমি কি হাত ধুয়েছো? হ্যাঁ, করোনামুক্তির এটাই সঠিক উপায়। কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশ্বজুড়ে মানুষের অভ্যাসে পরিণত হওয়া সাবান এবং পানি দিয়ে হাত ধোয়া কোনও নতুন ঘটনা নয়,খ্রিষ্টপূর্ব ২৮০০ সালে প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রা এই পদ্ধতির ব্যবহার শুরু করেছিলেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকেও জনগণকে সচেতন করতে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার একটি বিজ্ঞাপন বারবার প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে করোনা জীবাণু ধ্বংসের সেরা উপায় সাবান-পানি। এমনকি কিভাবে হাত ধুতে হবে সেটাও দেখানো হচ্ছে বারবার।
স্বাস্থ্য কর্মী ছাড়া সাধারণ মানুষের মাস্ক ও গ্লোভের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেক চিকিৎসক ও গবেষক এটাকে জীবাণু সংক্রমণে সহায়ক বলেও মত দিয়েছেন। তবে সাবান-পানি নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। এমনকি এটা বেস্ট পোর্টেবল হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চেয়েও ভাল।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার কোনও দরকারই নেই। মানুষ এগুলো অকারণে বেশি দামে কিনে স্টক করছে। কিন্তু এর কোনও যুক্তিই নেই। সিম্পল সাবান পানি ব্যবহার করলেই চলবে। কাপড় কাঁচা সাবান হলেও চলবে। তবে গ্লিসারিন মুক্ত হলে একটু ভালো হয়। সাবান ক্ষারযুক্ত হলে জীবাণুটা দ্রুত মরে যায়।
যেখানে পানি ও সাবানের ব্যবস্থা নেই কেবলমাত্র তখনই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে, যাতে ওই সময়টা সুরক্ষিত থাকা যায়। তবে যেখানে পানি ও সাবান রয়েছে, সেখানে এটা ব্যবহার করাই ভালো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিকমেন্ডেড ‘ক্লোরক্স’ (বড় বড় কনটেইনাইরে বাজারে রয়েছে, যেটা দিয়ে হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করা হয়) দিয়ে ফ্লোর মুছে নেওয়া যায় তাহলে পারিপার্শ্বিক অবস্থাও পরিষ্কার থাকবে এবং জীবাণুমুক্তও হবে।
করোনার জীবণু ধ্বংসকারীদের মধ্যে অন্যতম সাবান-পানি, হ্যান্ড রাব, ক্লোরক্স-লাইজল (ঘর পরিষ্কারের লিকুইড) তার মধ্যে অন্যতম। ক্লোরক্স-লাইজল পাতলা কাপড়ে ভিজিয়ে নিয়ে ফার্নিচার মোছার কাজও করা যায়, তাতে এসব জায়গাও পরিষ্কার হবে। কিন্তু বেস্ট হচ্ছে সাবান-পানি। বালতিতে গুঁড়ো সাবান মিশিয়ে কাপড় ভিজিয়ে ফানির্চার মুছে নিয়ে আরেকটি কাপড় পানিতে ভিজিয়ে পরে মুছে নিলে এর মধ্যে আর কোনও জীবাণু থাকার সুযোগই নেই। এটা ক্লিনিংয়ের জন্য বেস্ট।
Discussion about this post