ভারতে এখন রাষ্ট্রীয় মদদে পদে পদে নিগৃহের স্বীকার হচ্ছেন মুসলিমরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে বর্ণবৈষম্য। পুদুচেরী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশনে স্নাতকোত্তরে সর্বোচ্চ নম্বরের অধিকারী রাবিহাকে হিজাব পরায় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ।
সমাবর্তনে যোগ দিতে হলে হিজাব খুলে আসতে হবে, এমন শর্ত দেয়ায় তিনি স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করে শুধু সার্টিফিকেট নিয়েই চলে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির জওহরলাল নেহরু অডিটরিয়ামে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তার হাত থেকেই সাফল্যের পুরস্কার নিতে গিয়েছিলেন রাবিহা। কিন্তু সেই সময় অনুষ্ঠানে ঢুকতেই দেয়া হয়নি তাকে। কারণ সেই হিজাব।
২০১৮ সালের ব্যাচের ওই ছাত্রী জানান, রাষ্ট্রপতি আসার কিছুক্ষণ আগেই তিনি অডিটরিয়ামে প্রবেশ করতে যান। কিন্তু সেখানেই নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে বাধা দেয়। তারা তাকে বলেন, হিজাব খুলে না এলে ভেতরে ঢুকতে দেয়া যাবে না। নিরাপত্তারক্ষীদের প্রস্তাবে রাজি হননি রাবিহা। রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তাকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।
এরপর কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের পদক ও সার্টিফিকেট দিতে শুরু করে। কিন্তু গোটা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে, সোনার পদক নিতে অস্বীকার করেন রাবিহা। শুধু সার্টিফিকেট নিয়েই বেরিয়ে আসেন তিনি। ক্ষুব্ধ রাবিহা বলেন, আমার সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে- তার প্রতিবাদেই আমি পদক নিতে অস্বীকার করি। নিরাপত্তারক্ষীরা আমাকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে বাধা দেয়। ওরা সন্দেহের চোখে দেখছিল আমাকে। যেন আমি কিছু একটা করার উদ্দেশ্যে ঢুকতে চাইছি। জানি না, ওরা কী ভাবছিল।
এর পরই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গ উঠে আসে তার কথায়। বলেন, পুলিশ যেভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করছে তার বিরোধিতা করছেন তিনি। গোটা ভারতের শিক্ষার্থীরা বর্তমান পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদস্বরূপ এই পদক নিতে অস্বীকার করেছেন তিনি। রাবিহার সঙ্গে এমন আচরণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
Discussion about this post