সাকিবের শাস্তির বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং বিসিবির মধ্যে সম্ভবত সমন্বয় ছিল। অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে ‘সংকটে ক্রিকেট’ শীর্ষক বৈঠকিতে তিনি একথা বলেন। বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে শুরু হয় বাংলা ট্রিবিউনের সাপ্তাহিক এই আয়োজন।
বিষয়টি নিয়ে বোর্ড এবং আইসিসির সমন্বয় থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সাবের বলেন, ‘একই তারিখে কয়েকটি ঘটনা ঘটলো। আইসিসির রিপোর্টে আছে বিস্তারিত। ২৯ তারিখ সাকিবকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেরা করা হলো। ওই তারিখেই সাকিব স্বীকার করলো, লেটার অব এগ্রিমেন্ট সই করলো। একই দিনে আইসিসি এই সংবাদ তাদের ওয়েবসাইটে দিলো। ২৯ তারিখেই বিসিবির মিটিং চললো। একই দিনে এই ঘোষণার পর ইন্ডিয়ার টিম ঘোষণা করা হলো। সব একই দিনে! তার মানে এই কাজটি নিশ্চয়ই আইসিসির সঙ্গে সমন্বয় করে ক্রিকেট বোর্ড করেছে। না হলে ক্রিকেট বোর্ডের সভা কেনো বিকাল ৩টা থেকে শুরু হবে? শুরু হলেও কেন আইসিসির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পর্যন্ত চলল। এতোগুলো ঘটনা একদিনে কীভাবে হয়। বিসিবির বোর্ড মিটিংয়ের শিডিউল ছিল ৩টায়। তারপর আবার টিম ঘোষণা হলো। তার মানে তারা জানতো ২৯ তারিখে আইসিসির সিদ্ধান্ত আসবে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিসিবি দ্রুত মিডিয়ায় একটি প্রেস নোট দিয়ে দিলো এবং এক ধরনের স্বাগত জানালো। আইসিসির যে রায়, এখানে তারা তিনটি ঘটনার কথা বলছে। আমার মনে হয়, এই রায়ের ময়নাতদন্ত করা উচিত যাতে ভবিষ্যতে এরকম আরেকটি ঘটনা না ঘটে। আইসিসির নতুন কোড অব কন্ডাক্ট কিন্তু ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে। কোড অব কন্ডাক্ট চালু হওয়ার পর থেকে ধরলে দুটি অপরাধে সাকিব অভিযুক্ত না। সাকিবের যদি দুটি অপরাধ বাদ হতো তাহলে কিন্তু একটা থাকে। তার জন্য সাজা হতো ছয় মাস। কিন্তু ছয় মাস আর এক বছরের সঙ্গে আরও এক বছরের ব্যবধান অনেক। এই জায়গায় বিসিবির উচিত ছিল তাদের কাছ থেকে জানা।’
তিনি বলেন, ‘এক ধরনের চাপের মুখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাকিব– এমন দাবি করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আইসিসির রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাকিব আল হাসান এই বিষয়ে আর কোনও শুনানির প্রয়োজন মনে করে না এবং সময় বাঁচাতে চেয়েছে। শুনানি আর আত্মপক্ষ সমর্থন এটা প্রাকৃতিক বিচার ব্যবস্থা। সাকিবকে কিন্তু চাপ দিয়ে সারেন্ডার করাল। যেন তাকে বলা হচ্ছে যে– “আমি তোমাকে হালকা শাস্তি দেবো।” ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব তো খেলোয়াড়ের পাশে দাঁড়ানো। আইসিসির সঙ্গে এই এগ্রিমেন্ট একই দিনে না করে যদি ভারত সফরের পরে করতো তাতে সমস্যা কী ছিল? এই যে এক দিনে এতগুলো ঘটনা, এখানে কি কোনও সমন্বয় ছিল না আইসিসি আর বিসিবির মধ্যে? এটা আমার কাছে বিশ্বাস হয় না।’
সাংবাদিক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় আজকের বৈঠকিতে আরও অংশ নিচ্ছেন– সাবেক ক্রিকেটার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, ক্রীড়া সংগঠক জালাল আহমেদ চৌধুরী, বিসিবির সাবেক পরিচালক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, দৈনিক কালের কণ্ঠের উপ-সম্পাদক মোস্তফা মামুন এবং বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল।
Discussion about this post