প্রতিবাদ প্রতিবাদই। এর কখনো ভাষা হয়। আবার অনেক কর্মকাণ্ডই হয়ে উঠে প্রতিবাদের ভাষা। তেমনি আত্মহত্যা করে যেন প্রতিবাদ করে গেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের সৌদি আরব ফেরত তরুণী আসমা বেগম।
গত ২০ নভেম্বর আত্মহত্যা করে এ তরুণী। সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউপির চাঁনপুর গ্রামের দেওয়ান আলীর মেয়ে আসমা বেগম। তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সে। তাকে হারিয়ে পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম।
আসমার পরিবার সিলেটে ভাড়া বাসায় থাকতো। সংসারের স্বচ্ছলতার আশায় আসমা ঢাকায় গার্মেন্টে চাকুরি নেয়। সেখানে প্রায় তিন বছর চাকরি করার পর মাস ছয়েক আগে সুযোগ পেয়ে পাড়ি জমায় সৌদি আরবে। সেখানে গিয়ে প্রথম তিন মাস ১৮ হাজার টাকা করে বাড়িতে পাঠায়। এরপর থেকে তার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নিযার্তন। বাঁচতে গিয়ে নিজেই সেখানকার পুলিশের কাছে ধরা দেন।
গত ২৭ অক্টোবর সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেন। দেশে এসেও অস্বস্তিতে ছিলেন আসমা। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া আসমা আরো যন্ত্রণার মধ্যে পড়েন মানুষের নানা কথায়। কোনোভাবেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। অবশেষে মরে গিয়ে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি নিলেন আসমা। গত ২০ নভেম্বর রাতে বোন জামাই হোসেন মিয়ার নন্দীপাড়ার বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
আসমার মৃত্যু নিয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকার কারণে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কালীকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. শরাফত আলী জানান, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। হয়তো মানসিক যন্ত্রণার কারণেই সে এমন করেছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করতে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু জানান, সৌদি আরব থেকে ফিরেও মেয়েটি মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে ছিল। মানসিক তৃপ্তির জন্য তাকে বোন জামাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে পাঠানো হয়। সেখানেই একদিন থাকার পর সে আত্মহত্যা করে। মানসিক যন্ত্রণা থেকেই সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ ছিল না।
Discussion about this post